পেগাসাস ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তৃণমূল। বাস্তবিক ভাবে তাই শহিদ দিবসের ভাষণে মমতার মুখেও এদিন আদি অন্ত শোনা গেল পেগাসাস বিতর্কের কথা। স্লোগান দেন তৈরি করেই রেখেছিলেন। পেগাসাস..পেগাসাস… নরেন্দ্র মোদীর এর নাভিঃশ্বাস, কিংবা পেগাসাস হঠাও দেশ বাঁচাও। ইত্যাদি ইত্যাদি। এর পরেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীমায় পেগাসাস নিয়ে কড়া ভাষায় বিজেপির শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উঠে দেখান তাঁর মোবাইলের ক্যামেরা সেলোটেপ দিয়ে আটকানো। তারপরই চিরাচরিত ভঙ্গিতে আক্রমনাত্মর হয়ে ওঠেন তিনি। বলেন, কেন্দ্রের এই সরকারকেও সেলোটেপ দিয়ে আটকে দিতে হবে।
নিজের ভাষায় এদিন মমতা বললেন, ‘স্পাইগিরি’ করছে বিজেপি। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।ভারতের বহু মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করেছে ইজরায়েলি সংস্থার স্পাইওয়্যার পেগাসাস৷ ফোন হ্যাকিংয়ের তালিকায় রয়েছেন বহু ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক, বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মী। বেশির ভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে৷ গত রবিবার এই বোমা ফাটায় দ্য গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য ওয়্যারের মতো দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম৷যা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে জাতীয় রাজনীতি। যার রেশ গিয়ে পড়েছে সংসদের দুই কক্ষে। এবার সেই একই বিষয় নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “মানুষের গোপনিয়তা আর নিরাপদে নেই। মানুষ কি খাচ্ছে, কখন ঘুমাচ্ছে সবকিছুর উপরে নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র।”
মোবাইল ব্যবহার করে সকল আধিকারিক এবং মুখ্যমন্ত্রীদের উপরেও নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মমতা। সেই সঙ্গে তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, “আদালতের বিচারকদের মোবাইলও ট্যাপ করছে কেন্দ্র।” এ ছাড়াও তৃণমূল সুপ্রিমো আরও দাবি করেছেন যে মোদী সরকার নিজের মন্ত্রীদের উপরেও নজরদারি চালাচ্ছে। যা খুবই ভয়ঙ্কর।এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে যাতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে তার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় যাতে পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করার আবেদনও শোনা গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে। সেই সঙ্গে অত্যন্ত নিশ্চিতভাবে মমতা বলেছেন, “আমার ফোন ট্যাপ হয়েছে। অভিষেকের হয়ে থাকলে আমার তো হবেই। কারণ আমরা ফোনে কথা বলে থাকি।”